ঢাকা ২৯শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ই আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১১:৫৬ পূর্বাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০২১
নিজস্ব প্রতিবেদক, জাগো সখীপুর :
বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা ২০ হাজার টাকায় উন্নীত করার ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেছেন, ‘কোনো মুক্তিযোদ্ধা কষ্টে থাকবে না। তাদের সবার জন্য থাকার ব্যবস্থা করে দিচ্ছি। তাদের জীবন-জীবিকার ব্যবস্থা ও রাষ্ট্রীয় সম্মানের ব্যবস্থা করে দিচ্ছি।’
সোমবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানী ভাতা প্রদান কার্যক্রমের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এ ঘোষণা দেন তিনি। অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী।
বর্তমান সরকারের মেয়াদে মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণের লক্ষ্যে উদ্যোগ গ্রহণের কথা তুলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘২১ বছর পরে যখন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে, তখন আমরা উদ্যোগ নিই জাতির কাছে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান ফিরিয়ে দিতে। সেই সঙ্গে অনেক দুস্থ মুক্তিযোদ্ধাকে কিছু সহযোগিতার ব্যবস্থা করি। তাদের জন্য ভাতার ব্যবস্থা করে দিই। আর যারা খেতাবপ্রাপ্ত তাদের জন্য ভাতার ব্যবস্থা করি।’
‘আমরা সেই ভাতা যখন চালু করি, তখনকার সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে মাসিক তিনশ টাকা করে শুরু করেছিলাম। আজকে তা ১২ হাজারে উন্নীত করা হয়েছে। তবে মনে করি; এই সময় ১২ হাজার টাকা কিছুই না।–যোগ করে প্রধানমন্ত্রী।
সরকারপ্রধান বলেন, ‘আমাদের কল্যাণ ট্রাস্ট বোর্ডের মিটিং ছিল, সেখানে এতগুলো ভাগ ভাগ না করার কথা বলেছি। আমার মনে হয়, এটির বিষয়ে মুক্তিযোদ্ধামন্ত্রী ব্যবস্থা নেবেন এবং আমরা আমাদের তরফ থেকে তাদের ভাতা দেব। নিচের দিকে যে কয়টা স্লট আছে, সেগুলোকে এক জায়গায় নিয়ে এসে আমরা ২০ হাজার টাকা করেই মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা বৃদ্ধি করব।’
সারাদেশে ১ লাখ ৯২ হাজার ৫৩২ জন মুক্তিযোদ্ধাকে প্রচলিত পদ্ধতিতে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে জনপ্রতি মাসিক ১২ হাজার টাকা সম্মানী ভাতা দেওয়া হয়। এছাড়া শহীদ, যুদ্ধাহত ও খেতাবপ্রাপ্ত ১২ হাজার ৬৭৪ জন মুক্তিযোদ্ধাকে শ্রেণিভেদে ১৫ হাজার থেকে ৪৫ হাজার টাকা পর্যন্ত সম্মানী ভাতা দেওয়া হয়। সাধারণ মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানী ভাতা মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের সহায়তায় উপকারভোগীর অনুকূলে বিতরণ করা হয়। অন্যদিকে শহীদ, যুদ্ধাহত ও বেসামরিক খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাদের বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট এবং বিভিন্ন বাহিনীর খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাদের সংশ্লিষ্ট বাহিনীর মাধ্যমে মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া হয়। মোট ভাতাভোগী মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ২ লাখ ৫ হাজার ২০৬ জন।
হয়রানি লাঘবে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ইএফটি-এর মাধ্যমে (ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার) বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মাসিক সম্মানী ভাতা সহজে তাদের কাছে পৌঁছানোর জন্য উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। গভর্নমেন্ট টু পারসন (জিটুপি) প্রক্রিয়ায় সরকার সরাসরি সংশ্লিষ্ট সুবিধাভোগীকে দেয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়।
আজ এ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রায় ১ লাখ ৬৮ হাজার মুক্তিযোদ্ধা বা তাদের উপকারভোগীকে জানুয়ারি মাসের ভাতা বাবদ ১৮২ কোটি ৩৩ লাখ টাকা বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সরাসারি ভাতা ভোগীর ব্যাংক হিসাবে পাঠানো হবে। পর্যায়ক্রমে সব মুক্তিযোদ্ধার সম্মানী ভাতা জিটুপি প্রক্রিয়ায় দেওয়া হবে। এ পদ্ধতি বাস্তবায়নের মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধাদের সহজে সেবা দেওয়া সম্ভব হবে।
রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালে যুক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার মুক্তিযোদ্ধাদের প্রাপ্য সম্মান বুঝিয়ে দিয়েছে। আমি আগেও বলেছি, একজন মুক্তিযোদ্ধাও গৃহহীন থাকবেন না, একজন মানুষও গৃহহারা থাকবে না। কাজেই আমরা সেই ব্যবস্থা নিচ্ছি যে, মুজিববর্ষে বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষ, যারা ভূমিহীন-গৃহহীন, তাদের যেমন ঘর দেব, তেমনি মুক্তিযোদ্ধাদেরও যাদের জীর্ণ-শীর্ণ ঘর, তাদের ঘর তৈরি করে দেওয়া হবে। তারা সুন্দরভাবে বাঁচুন, সেটাই আমরা চাই। তাদের পরিবারও ভবিষ্যতে ভালো থাকবে, সেটাই আমরা চাই।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যারা মুক্তিযোদ্ধার বিরোধিতাকারী এবং জাতির পিতার আত্মস্বীকৃত খুনি, তারাই মূলত ক্ষমতায় চলে আসে।’ ১৯৯৬ সালের আজকের এই দিন স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘১৯৯৬ সালের আজকের এই দিনে বাংলাদেশে একটা ভোটারবিহীন নির্বাচন হয়েছিল। ১৯৭৫ সালের পর জিয়াউর রহমান অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে শুধু মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নস্যাৎ করেছেন তা নয়, মানুষের ভাত ও ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছিলেন।’
শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রতিটি ঘর আলোকিত হবে। প্রতিটি মানুষ উন্নত জীবন পাবে, এটাই আমাদের লক্ষ্য। জাতির পিতার যে স্বপ্ন, ক্ষুধামুক্ত-দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলা গড়ে তোলা-আমরা সেই স্বপ্নই বাস্তবায়ন করতে চাই, লাখো শহীদের রক্তে অর্জিত এই বাংলাদেশ হবে বিশ্বে উন্নত-সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ।’
জাগো সখীপুর / এস এম
তুহিন সিদ্দিকী
মানবতার ফেরিওয়ালা
এম জাকির হোসেন
যোগাযোগ: মনির উদ্দিন কমপ্লেক্স, উপজেলা রোড, সখীপুর, টাঙ্গাইল।
মোবাইল :০১৯১২-৬৩৫৯১৭ ইমেইলঃ newsjagosakhipur@gmail.com
মোখলেছুর রহমান যায়েদ, শিক্ষানবিশ আইনজীবী, জজ কোর্ট, ঢাকা
* বার্তা সম্পাদক : মোঃ রাহমাতুল্লাহ
© জাগো সখীপুর এ প্রকাশিত লেখা কপি করা নিষেধ