টাঙ্গাইলে রাক্ষুসে যমুনা ২৪ ঘন্টায় গিলে খেলো প্রায় ১’শ বসতভিটা

প্রকাশিত: ১২:০১ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২৯, ২০২১

টাঙ্গাইলে রাক্ষুসে যমুনা ২৪ ঘন্টায় গিলে খেলো প্রায় ১’শ বসতভিটা

 

নিজস্ব প্রতিনিধি :

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও টানা বৃষ্টিতে বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে প্রমত্মা যমুনা নদীর পানি। পাশাপাশি বেড়েছে শাখা নদীগুলোর পানিও। এতে গত ২৪ ঘন্টায় প্রায় একশত বসতবাড়ী যমুনাগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। বিলীন হয়ে গেছে শত শত একর ফসলি জমি। বসতবাড়ী ঘর হারিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন নদী তীরবর্তী মানুষেরা। নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা না থাকায় নতুন নতুন জনপদ রয়েছে ভাঙ্গনের চরম হুমকির মুখে।

 

 

সরেজমিনে দেখা যায়, যমুনার সাথে যুদ্ধ করে জীবন যাপন করছিলেন নদী পাড়ের মানুষগুলো। যমুনার অব্যাহত ভাঙ্গণে পাল্টে গেছে সেখান দৃশ্যপট। যেখানে একসময় ছিল ফসলের মাঠ, বসতবাড়ি খেলার মাঠ, মসজিদ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। চার পাশে এখন শুধু পানি আর পানি। নদীর পাড় ভাঙ্গে বাড়ে যমুনার সীমানা। সেই সাথ বাড়ে সেখান কার মানুষের কান্না আর কষ্ট। যমুনা পাড়ের অসহায় মানুষের চোখের পানি আর নদীর পানি আজ একাকার। বিশেষ করে যমুনা অববাহিকায় কালিহাতীর আলীপুর ও ভৈরববাড়ীতে ৫০টি, (শাখা নদী লৌহজং) দশকিয়া ও হাতিয়া ৬৩টি এলাকায় প্রায় শতাধিক বসতবাড়ি নদীগর্ভে চলে গেছে। বসতভিটা হারিয়ে শুধুমাত্র গবাদিপশু অন্যত্র সরিয়ে নিতে ব্যস্ত। নিমিশেই যমুনাগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে বসতবাড়ি।

 

 

স্থানীয়রা জানান, হবি মন্ডল, মোহাম্মদ আলী, ইউসুফ আলী, হাফিজুর রহমান, হানিফ মিয়া, ইদ্রিস আলী, লিয়াকত মন্ডল, জুলহাস মন্ডলসহ প্রায় শতাধিক মানুষের বাড়ীঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ভূক্তভোগী ইদ্রিস আলী বলেন, ১৪ পুরুষের ভিটেমাটি গিলে খাচ্ছে রাক্ষুসী যমুনা। নিমিশেই সব কেড়ে নিল। আমরা সর্বশান্ত হয়ে গেছি।

 

 

শিক্ষক আল মামুন বলেন, বন্যা ও বৃষ্টিতে ভাঙ্গণ বৃদ্ধি পেয়েছে। গত শনিবার দুপুর থেকে শনিবার সকাল ১০ টা পর্যন্ত আলীপুর ও ভৈরববাড়ীতে ৬০টি বাড়িঘর নদীতে চলে গেছে। এর মধ্যেই শুধু একটি ঘরানো সম্ভব হয়েছে। আর কোন ঘর রক্ষা করা যায়নি। এবারের বন্যায় প্রায় ৩ থেকে সাড়ে ৩’শ বাড়িঘর নদীতে চলে গেছে। অতি দ্রুত স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ হলে ভবিষ্যতে স্কুল, মাদ্রাসাসহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বাঁচানো সম্ভব হবে।

 

টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারি প্রকৌশলী মো. সোলায়মান ভূইয়া জানান, ভাঙ্গন রোধে সাময়িক ইমার্জেন্সি কাজ চলছে। তবে এটা কোন স্থায়ী সমাধান না। ভাঙ্গন রোধ ঠেকাতে স্থায়ী বাঁধ নির্মানের বিকল্প নেই বলেও তিনি জানান। যমুনাগর্ভে বিলীনের পথে বসতবাড়ি। রশিদ দিয়ে ঘর নদী থেকে পাড়ে তোলার চেষ্টায় স্থানীয়রা ।

 

টাঙ্গাইলের জেলা প্রশসক মো. আতাউল গনি বলেন, কালিহাতী উপজেলার ৩টি ইউনিয়নে ৯০টি বাড়ীঘর নদীগর্ভে বিলীনের খবর পেয়েছি। ক্ষতিগ্রস্থদের প্রাথমিকভাবে ৫ হাজার টাকা করে বরাদ্দ দেয়া হবে। উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে বলা হয়েছে। এছাড়া ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকা করে তাদের জন্য টিন এবং আশ্রায়ন প্রকল্পের আওতায় বাসযোগ্য স্থানের ব্যবস্থা করা হবে।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

Like Us On Facebook

Facebook Pagelike Widget